রাজধানীর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আব্দুল্লাহপুর রেলক্রসিং পর্যন্ত রেলের জমি অবৈধ দখলে চলে গেছে। এলাকার রেললাইনের দুই পাশজুড়ে শত শত অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। রেলওয়ের এসব জমি দখল করে দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনা তুলে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। তারা এসব দোকান ভাড়া দিয়ে নিয়মিত টাকা নিচ্ছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, বিমানবন্দর থেকে আব্দুল্লাহপুর রেলক্রসিং পর্যন্ত রেলের দুপাশের জমি দখল করে ছোট ছোট টং দোকান, ভ্যান ও বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠেছে। সেখান থেকে প্রতিদিন ২০০-২৫০ টাকা করে চাঁদা তোলা হচ্ছে। সেখানে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ দোকান ও বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে কয়েকটি চক্র কাজ করে। এখান থেকে একটি প্রভাবশালী মহল এ ভাড়া আদায় করছে। সেখানে কয়েকজন দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে দোকান বসাতে হলে প্রভাবশালী দুজনের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারাই এখানে দোকান বসার অনুমতি দেবে, তাছাড়া এখানে দোকান বসাতে পারবেন না। এখানে প্রতিদিন দোকান বসাতে হলে ২০০-২৫০ টাকা দিতে হয়। ওই এলাকার একজন দোকানদার বলেন, ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আমি এই দোকান করছি। আরেকজনের কাছ থেকে এই দোকান নিয়েছি। তবুও যদি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চায় দোকান ছেড়ে দেব। একইভাবেই এ এলাকায় রেলের জমি দখল করে দোকানঘর তুলেছেন অনেকে। এগুলো ভাড়া দিয়েছেন তারা। বছরের পর বছর ধরে এসব রেলওয়ের জমি বেদখল হয়ে থাকায় সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। সেই সঙ্গে রেললাইনের দুপাশে শত শত অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় মাঝেমধ্যে ঘটে দুর্ঘটনা।
এদিকে রেলের কাছ থেকে কিছু জমি ইজারা নিয়ে দোকান বসিয়েছেন বলে জানান কাজল নামের এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি সাব-ইজারা নিয়েছেন। যার কাছ থেকে তিনি ইজারা নিয়েছেন, তিনি পলাতক রয়েছেন। তাই গণমাধ্যমকর্মীদের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারব না। বিমানবন্দরের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, বিমানবন্দর স্টেশন থেকে আব্দুল্লাহপুর রেলক্রসিং পর্যন্ত রেললাইনের দুপাশে প্রায় কয়েক কিলোমিটার জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। আমার জানামতে, রেললাইনের ৫০ ফিটের মধ্যে কোনো ইজারা দেওয়া হয় না। এ বিষয়ে রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, এখানে কয়েকটা জমি হয়তো ইজারা দেওয়া আছে। আর বাকিগুলো প্রভাবশালীরা দখল করে খাচ্ছে। কার কার নামে ইজারা আছে আমাদের কাছে লিপিবদ্ধ আছে।
কিছুদিন সময় দিলে আমি নামগুলো বলতে পারব। তারা অবশ্যই ইজারার সব কাগজপত্র ও প্রতিবছরের খাজনার কপি গণমাধ্যমকর্মীদের দেখাতে বাধ্য। যদি না দেখাতে পারে তাহলে বুঝে নেবেন তার বৈধতা নেই। তিনি আরও বলেন, রেলওয়ের জমি দখলমুক্ত করতে প্রায় সময়ই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে থাকি। আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। অভিযান পরিচালনা করে উচ্ছেদ করা হলে তারা উচ্ছেদ করা জমিতে আবারও দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেন।