নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সিলেটে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব তিথি জন্মাষ্টমী উৎসব পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। ইসকন মন্দির থেকে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রায় হাজারো নারী-পুরুষ ভক্তের ঢল নামে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করা শোভাযাত্রাটি এক অনন্য আধ্যাত্মিক ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
শোভাযাত্রার আগে ইসকন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও ইসকন সিলেট মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট সিটি কর্পোরশেনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন- ‘জন্মাষ্টমীর এ উৎসব সমাজে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করে, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে। আজকের এ মহোৎসব শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নয়, বরং সব সম্প্রদায়ের জন্য শান্তি ও সৌহার্দ্যের বার্তা বহন করছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অন্যায়ের বিনাশ ও ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমাদেরও উচিত তাঁর শিক্ষা অনুসরণ করে শান্তি ও সম্প্রীতির সমাজ গড়ে তোলা।’
জন্মাষ্টমী শোভাযাত্রা নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও সতর্ক উপস্থিতির কারণে পুরো শোভাযাত্রা নিরাপদ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। ইসকন সিলেটের ভক্তরা এজন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শোভাযাত্রার পর দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কীর্তনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মহাঅভিষেক অনুষ্ঠান ও অনুকল্প প্রসাদ বিতরণের আয়োজন করা হয়।
আগামীকাল রোববার মহোৎসবের শেষ দিন পালিত হবে নন্দোৎসব ও ইসকন প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল প্রভুপাদের ১২৯তম শুভ আবির্ভাব তিথি। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী থাকবে অভিষেক অনুষ্ঠান, মহিমা কীর্তন, শ্রীল প্রভুপাদের চরণকমলে সহস্র লাল গোলাপ নিবেদন, মহাপ্রসাদ বিতরণ ও অফারিং লেটার পাঠ। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে গৌরসুন্দর আরতি, শ্রীল প্রভুপাদ কথামৃত, নাটক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
জন্মাষ্টমী উৎসবকে কেন্দ্র করে পুরো সিলেট জুড়ে ভক্ত ও সাধারণ মানুষের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতির আবহ।